আপনারা কি ঔষধি গাছ নাম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন?
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক ঔষধি গাছ রয়েছে যাদের ঔষধি গুন ও উপকারিতা অনেক।
আজকে আমরা আপনাদের ঔষধি গাছের নামের তালিকা ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাব।
ঔষধি গাছের নামের তালিকা
বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই ঔষধি গাছ বা ভেষজ গাছ পাওয়া যায়।
সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সুন্দরবন এবং জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেনে।
কালোকেশি, থানকুনি, শতমূলী, স্বর্ণলতা, পাথরকুচি, আদা, গুজবেরি আরো কত ধরনের নাম তাদের।
এক এক ধরনের ঔষধি গাছের কাজ ও উপকারও এক এক রকম।
চলুন জেনে নেয়া যাক বাংলাদেশের পাওয়া যায় এমন কিছু ঔষধি গাছের নামের তালিকা।
বাংলাদেশের আরও কিছু ঔষধি গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -
- কর্পূর
- হিং
- হরিতকী
- বাসক
- ঘৃত কুমারি
- কালোমেঘ
- আদা
- রসুন
- হলুদ
- হেনা
- লজ্জাবতী
- জবা
- রিফিউজি লতা
- বিলম্ব
- অর্জুন
ঔষধি গাছের উপকারিতা
প্রকৃতিতে অসংখ্য ঔষধি গাছ রয়েছে যা মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য বেশ উপকারি।
প্রাকৃতিক ভাবে রোগ নিরাময় করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, পুষ্টি বৃদ্ধি করে, ত্বক ও চুল সুস্থ্য রাখে, ঔষধ তৈরি করে, বদহজম দূর করে ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে ঔষধি গাছ গুলো আমাদের উপকার করে থাকে।
ঔষধি গাছের উপকারিতা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো -
১. প্রাকৃতিক ভাবে রোগ নিরাময় করে
ঔষধি গাছগুলো বহু শতাব্দি ধরে ঐতিহ্যগতভাবে চিকিৎসাশাস্ত্রে ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
যেকোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধি গাছগুলোকে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
২. বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন আছে
ঔষধি গাছগুলোতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান যেমন অ্যালকালয়েড, টেরপেনয়েড এবং ফেনোলিক যৌগ রয়েছে।
এগুলোর বিভিন্ন থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় প্রতিষেধক তৈরিতে ঔষধি গাছ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মানব দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঔষধি গাছগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
এই ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ গুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা অনুজীবের সংক্রমণ রোধ করে এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করে।
৪. পুষ্টি বৃদ্ধি করে
বেশ কিছু ঔষধি গাছ ভিটামিন,খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে সক্ষম।
শুধুমাত্র দেহের সুস্থতায় নয় এটি শরীরের পুষ্টির ঘাটতি প্রতিরোধ করে দেহের পুষ্টি বর্ধক হিসেবে সহায়তা করে।
দেহে ভিটামিন বা পুষ্টির ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করা যায়।
৫. বদহজম দূর করে
বদহজম,কোষ্ঠকাঠিন্য,ডায়রিয়া,আমাশয় ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ঔষধি গাছগুলো বিশেষ সহায়তা করে থাকে।
দেহের বিভিন্ন অংঙ্গের প্রদাহ কমিয়ে হজম শক্তি বাড়াতে এবং বদহজম দূর করতে ভেষজ ঔষধ গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৬. ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে
ঔষধি গাছ গুলো প্রশান্তিদায়ক এবং মশ্চারাইজিং এর বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ যা ত্বকের যত্ন ও চুলের যত্নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রন,এক্সিমা,শুষ্কতা ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে এবং একইসাথে স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৭. পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ঔষধ তৈরি করে
ঔষধি গাছ দ্বারা বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধ তৈরি করা হয়ে থাকে যা আয়ুর্বেদিক হিসেবে চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়।
ভেষজ ঔষধ গুলোতে বিশেষ কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না এবং এগুলো ব্যবহারে দেহের কোনরকম ক্ষতি হয় না তবে এগুলো নিদ্রাবর্ধক।
ঔষধি গাছ থেকে প্রাকৃতিকভাবে এই ভেষজ ঔষধ গুলো তৈরি করা হয়ে থাকে যা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রশান্তি দেয় এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে।
শেষ কথা
বাংলাদেশে অসংখ্য ঔষধি গাছ রয়েছে যারা ঔষধি গুনাগুণে ভরপুর।
তবে ঔষধি গুন থাকলেও আমাদের এই ধরনের ঔষধি গাছ খুব সাবধানতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।