শুক্রবার, ২৩ জুন, ২০২৩

ঔষধি গাছের নামের তালিকা ও উপকারিতা

 


ঔষধি গাছের নামের তালিকা ও উপকারিতা



আপনারা কি ঔষধি গাছ নাম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন?


বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক ঔষধি গাছ রয়েছে যাদের ঔষধি গুন ও উপকারিতা অনেক।


আজকে আমরা আপনাদের ঔষধি গাছের নামের তালিকা ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাব।

ঔষধি গাছের নামের তালিকা 

বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই ঔষধি গাছ বা ভেষজ গাছ পাওয়া যায়। 


সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সুন্দরবন এবং জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা বোটানিক্যাল গার্ডেনে। 


কালোকেশি, থানকুনি, শতমূলী, স্বর্ণলতা, পাথরকুচি, আদা, গুজবেরি আরো কত ধরনের নাম তাদের।


এক এক ধরনের ঔষধি গাছের কাজ ও উপকারও এক এক রকম।


চলুন জেনে নেয়া যাক বাংলাদেশের পাওয়া যায় এমন কিছু ঔষধি গাছের নামের তালিকা। 



ঔষধি গাছের নাম 

বৈজ্ঞানিক নাম

কাজ

তুলসী গাছ

Ocimum tenuiflorum 

১. সর্দি, কাশি, ঠান্ডা জনিত সমস্যা দূর করে।


২. এই গাছের রস কৃমি ও বায়ুনাশক।


৩. আর্য়ুবেদ ও ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

আকন্দ

Calotropis gigantea

১. পাকস্থলীর ব্যাথা, ফোলাভাব নিরাময় করে। 


২. দাদ, অর্শ্ব, একজিমা, খোস পাঁচড়া,শ্বাসকষ্ট দূর করে। 


৩. এর পাতা সিদ্ধ পানি শরীরের কোনো ক্ষত স্থানে লাগালে তা সেরে যায়।

স্বর্নলতা

Cuscuta europaea

১. এটি বায়ুনাশক এবং পেটব্যথা নিরাময় করে। 


২. ডায়াবেটিস, যকৃতের রোগ, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট নিরাময়ে সাহায্য করে। 


৩. মুখের অরুচি ভাব দূর করে, মুখের ঘা সারায়।

তেলাকুচা 

Coccinia grandis

১. কুষ্ঠ, ডায়াবেটিস, শোথ,হাঁপানি, জন্ডিস ইত্যাদি রোগ নিরায়ে সাহায্য করে।


২. পেটের সমস্যা ও বদহজম দূর করে। 


৩. শরীরের চর্বি ভেংগে স্থুলতা কমায় এবং পরিপাকক্রিয়া সহজ করে।

সোনালু

Cassia fistula

১. ডায়রিয়া ও বহুমূত্র দূর করে। 


২. এন্টিব্যাক্টেরিয়াল গুনাগুণ অনুজীব ধ্বংস করতে সাহায্য করে।


৩. এতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা একটি ঔষধি গুনাগুণ।

নিম গাছ

Azadirachta indica 

১. ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস ধ্বংস করে অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে।


২. ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময় করে। 


৩. দন্ত চিকিৎসা, জ্বর কমাতে ও জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

বাংলাদেশের আরও কিছু ঔষধি গাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -

  • কর্পূর
  • হিং
  • হরিতকী
  • বাসক
  • ঘৃত কুমারি
  • কালোমেঘ
  • আদা
  • রসুন
  • হলুদ
  • হেনা
  • লজ্জাবতী
  • জবা
  • রিফিউজি লতা
  • বিলম্ব
  • অর্জুন
এছাড়াও আরো অনেক বাহারি নামের ঔষধি গাছ বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বনে জঙ্গলে আছে যাদের ঔষধি গুনাগুণ ও উপকারিতাও বাহারি ধরনের। 

ঔষধি গাছের উপকারিতা 

প্রকৃতিতে অসংখ্য ঔষধি গাছ রয়েছে যা মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য বেশ উপকারি।


প্রাকৃতিক ভাবে রোগ নিরাময় করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, পুষ্টি বৃদ্ধি করে, ত্বক ও চুল সুস্থ্য রাখে, ঔষধ তৈরি করে, বদহজম দূর করে ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে ঔষধি গাছ গুলো আমাদের উপকার করে থাকে।


ঔষধি গাছের উপকারিতা গুলো নিচে তুলে ধরা হলো -

১. প্রাকৃতিক ভাবে রোগ নিরাময় করে

ঔষধি গাছগুলো বহু শতাব্দি ধরে ঐতিহ্যগতভাবে চিকিৎসাশাস্ত্রে ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 


যেকোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধি গাছগুলোকে বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

২. বিভিন্ন ঔষধি গুনাগুন আছে

ঔষধি গাছগুলোতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান যেমন অ্যালকালয়েড, টেরপেনয়েড এবং ফেনোলিক যৌগ রয়েছে।


এগুলোর বিভিন্ন থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার ফলে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় প্রতিষেধক তৈরিতে ঔষধি গাছ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

মানব দেহে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ঔষধি গাছগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 


এই ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ গুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা অনুজীবের সংক্রমণ রোধ করে এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করে।

৪. পুষ্টি বৃদ্ধি করে

বেশ কিছু ঔষধি গাছ ভিটামিন,খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে সক্ষম। 


শুধুমাত্র দেহের সুস্থতায় নয় এটি শরীরের পুষ্টির ঘাটতি প্রতিরোধ করে দেহের পুষ্টি বর্ধক হিসেবে সহায়তা করে।


দেহে ভিটামিন বা পুষ্টির ঘাটতি হলে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করা যায়। 

৫. বদহজম দূর করে

বদহজম,কোষ্ঠকাঠিন্য,ডায়রিয়া,আমাশয় ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে ঔষধি গাছগুলো  বিশেষ সহায়তা করে থাকে। 


দেহের বিভিন্ন অংঙ্গের প্রদাহ কমিয়ে হজম শক্তি বাড়াতে এবং বদহজম দূর করতে ভেষজ ঔষধ গুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

৬. ত্বক ও চুল সুস্থ রাখে 

ঔষধি গাছ গুলো প্রশান্তিদায়ক এবং মশ্চারাইজিং এর বৈশিষ্ট্যসমৃদ্ধ যা ত্বকের যত্ন ও চুলের যত্নে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 


ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ব্রন,এক্সিমা,শুষ্কতা ইত্যাদি  দূর করতে সাহায্য করে এবং একইসাথে স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

৭. পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন ঔষধ তৈরি করে

ঔষধি গাছ দ্বারা বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ঔষধ তৈরি করা হয়ে থাকে যা আয়ুর্বেদিক হিসেবে চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহার করা হয়। 


ভেষজ ঔষধ গুলোতে বিশেষ কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না এবং এগুলো ব্যবহারে দেহের কোনরকম ক্ষতি হয় না তবে এগুলো নিদ্রাবর্ধক।


ঔষধি গাছ থেকে প্রাকৃতিকভাবে এই ভেষজ ঔষধ গুলো তৈরি করা হয়ে থাকে যা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রশান্তি দেয় এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। 

শেষ কথা

বাংলাদেশে অসংখ্য ঔষধি গাছ রয়েছে যারা ঔষধি গুনাগুণে ভরপুর।


তবে ঔষধি গুন থাকলেও আমাদের এই ধরনের ঔষধি গাছ খুব সাবধানতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। 


মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩

যে খাবার খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে

 

যে খাবারে হিমোগ্লোবিন বাড়ে

রক্তে হিমোগ্লোবিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। যেসকল খাবার গ্রহন করলে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি পায় তা নিয়মিত গ্রহন করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 


হিমোগ্লোবিন রক্তের একটি কনিকা এবং এর পরিমান নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। রক্তে হিমোগ্লোবিন অধিক পরিমানে বেড়ে গেলে আবার অধিক পরিমানে কমে গেলেই ঘটতে পারে বিপত্তি।


আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে বা হ্রাস পেলে যে খাবার খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে বা বৃদ্ধি পাবে সে সম্পর্কে জানাই আজকে আমাদের আলোচনার মুখ্য বিষয়। 

হিমোগ্লোবিন কি

হিমোগ্লোবিন হলো আমাদের শরীরে বাহিত রক্তের লোহিত কনিকার একধরনের প্রোটিন। এটি রক্তের রঙ লাল করে এবং রক্তের ঘনত্ব বজায় রাখে। রক্তকনিকার মোট ওজনের প্রায় ৩৫ শতাংশই হিমোগ্লোবিন। 


এটি বর্ণহীন রক্তকে লাল করতে এবং রক্তের বিভিন্ন রকম উপাদানের পরিমান ঠিক রেখে রক্তকে ঘন করে।


হিমোগ্লোবিন এর মূল কাজ হলো রক্তের মাধ্যমে দেহে অক্সিজেন পরিবহন করা। এটি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন। 


হিমোগ্লোবিন রক্তের লোহিত কনিকায় মেটালো প্রোটিন হিসেবে অবস্থান করে এবং রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে থাকে।

হিমোগ্লোবিন বাড়ে যেসব খাবারে 

লৌহ সমৃদ্ধ খাবার হিমোগ্লোবিনের মূল উৎস। যেসকল খাবারে লৌহ জাতীয় পদার্থের আধিক্য বেশি সেসকল খাবারই হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য দ্বায়ী খাবার। 


হিমোগ্লোবিন বাড়ার খাদ্য

হিমোগ্লোবিন বাড়ে এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে আপেল, তরমুজ, মুরগীর কলিজা, ডিম, বেদানা, কিশমিশ, জলপাই, ঝিনুক, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার ইত্যাদি। 


ভিটামিন সি জাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন - কমলা, আমলকি, ব্রোকোলি, টমেটো, গোলমরিচ ইত্যাদি খাবার নিয়মিত গ্রহনের ফলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে।


বিভিন্ন ফলিক এসিড যেমন - ভাত, কলা, শিমের বিচি, সবুজ শাকসবজী, বাদাম ইত্যাদি খাবার নিয়মিত গ্রহনের ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি পায়।

রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার কারণ

হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার মূল কারন হলো দেহে লৌহ জাতীয় পদার্থের ঘাটতি। দেহে লৌহের স্বল্পতা দেখা দিলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কমে যায়।


রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে লৌহ সমৃদ্ধ খাবার দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও ভিটামিন সি এর অভাবে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দেয়।


লৌহ জাতীয় খাবার হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং ভিটামিন সি ছাড়া এই লৌহ জাতীয় খাবার সম্পূর্ণভাবে দেহ শোষণ করতে পারে না। তাই রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়।

রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির উপায়

আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ মেটালোপ্রোটিন হলো হিমোগ্লোবিন যা রক্তের লোহিত কনিকায় অবস্থান করে। রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কমে গেলে তা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।


দেহে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতার কারনে অক্সিজেনের সরবারাহ কমে যায়। ফলে রক্তকনিকার ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং রক্তের পরিমান কমতে শুরু করে।


একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রক্তকনিকার প্রতি লিটারে হিমোগ্লোবিনের পরিমান ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম হলে তা রক্তশূন্যতা হিসেবে পরিচিত।


এই রক্তশূন্যতা প্রতিরোধের জন্য আমাদের নিয়মিত এমন খাবার গ্রহন করতে হবে যে খাবার খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়ে। রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির কিছু সেরা উপায় এখন আমরা আলোচনা করব।

লাল মাংস খাওয়া

রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির একটি কার্যকর উপায় হলো লাল মাংস খাওয়া। এতে হিম আয়রন থাকে যা উদ্ভিদের নন-হিম আয়রন থেকে অধিক সহজে দেহ শোষণ ও ব্যবহার করতে পারে। 


হিমোগ্লোবিন বাড়ে এই খাবারে


লাল মাংসে ভিটামিন বি, জিংক, সেলেনিয়া ও প্রোটিনের মতো কিছু পুষ্টিগুন থাকে যা রক্তে লোহিত কনিকা তৈরি করার জন্য অপরিহার্য। 


সপ্তাহে প্রায় ৩ আউন্স লাল মাংস খাওয়া উচিত। সঠিকভাবে লাল মাংস বাছাই করা এবং গ্রহন করার মাধ্যমে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি করা সম্ভব। 

বেশি বেশি ডিম খাওয়া 

ডিম লৌহ জাতীয় পদার্থের একটি দুর্দান্ত উৎস যা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। 


হিমোগ্লোবিন বাড়ার খাবার


ডিমে ভিটামিন বি১২, ফোলেট, সেলেনিয়াসহ বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ বিদ্যমান যা লোহিত কনিকা উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।


প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি ডিম আপনার খাবারের তালিকায় অবশ্যই রাখা উচিত। এতে করে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়বে এবং ডায়েটের জন্যও বেশ উপযোগী। 

পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি গ্রহন

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়িয়ে রক্তের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য এবং দেহকে সুস্থ রাখার জন্য পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজির কোনো বিকল্প নেই।



হিমোগ্লোবিন বাড়ে যে খাবারে


পালং শাক, বাধাকপি, ব্রোকোলি ইত্যাদি পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজিতে ফলিক ও লৌহ থাকে যা হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 


কাচা পালং শাকের তুলনায় রান্না করা পালং শাক অধিক শোষণযোগ্য লৌহ সরবারাহ করে যা বেশ উপকারি। এছাড়াও মটরশুঁটি, বাদাম, শিম, ছোলা ইত্যাদি গ্রহনের ফলে লৌহের অভাব দূর হয় এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়ে। 

শুকনো ফল গ্রহন

হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়াতে হলে প্রচুর শুকনো ফল খাওয়া একটি সহজ উপায় হতে পারে। শুকনো ফল লৌহ, ভিটামিন সি এবং বি কমপ্লেক্স ভিটামিনে ভরপুর থাকে যা হিমোগ্লোবিন বাড়ায়।


হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির খাবার


খেজুর, আপেল, কলা, কিশমিশ, এপ্রিকট ইত্যাদি শুকনো ফল দেহে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়িয়ে রক্তের ভারসাম্য রক্ষা করে।


প্রতিদিন মাত্র কয়েক মুঠো শুকনো ফল খাওয়ার ফলে আপনার হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক ভাবে বাড়ানোর জন্য সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পাবেন কম সময়েই।

শেষকথা

সুস্বাস্থ্য আমাদের সকলের কাম্য। সঠিক খাবার গ্রহন আপনার শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে যা আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। 


উচ্চ পরিমানে লৌহ যুক্ত খাবার যেমন - লাল মাংস, শাকসবজি, শুকনো ফল, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার ইত্যাদি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধির জন্য আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। 

শুক্রবার, ৫ মে, ২০২৩

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা

 

খাদ্য তালিকা

একজন ডায়াবেটিস রোগীর সুস্থ থাকার জন্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বা Suger level এর মাত্রা বজায় রাখার জন্য সুষম খাদ্য গ্রহন অপরিহার্য। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের মধ্যে জটিল শর্করা, চর্বিহীন প্রোটিন, হেলদি ফ্যাট ( Healthy Fat), বিভিন্ন ধরনের ফলমূল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সর্বোত্তম স্বাস্থ্যের জন্য এই খাবারগুলো পরিমিতভাবে এবং সঠিক অনুপাতে খাওয়া উচিত। 

ডায়াবেটিস রোগীর খাবার


একজন ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হলো খাদ্য গ্রহনের পূর্ব পরিকল্পনা করা এবং আপনার যখন প্রয়োজন তখন আপনার কাছে সঠিক খাবার আছে তা নিশ্চিত করা। এটি সারাদিন আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। আজকে আমরা একটি ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা তৈরি এবং বজায় রাখার জন্য বিস্তারিত কিছু উপায় আলোচনা করব যা সব বয়সের ডায়াবেটিস রোগী ফলো করতে পারবে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খাদ্য গ্রহনের তালিকায় কিছু বিশেষ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকায় যেসব খাবার থাকতে হবে তা হলো -


  • ভালো খাবার বাছাই করা ডায়াবেটিস পরিচালনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুষ্টিকর খাদ্য এবং বিভিন্ন স্ন্যাকস (Snacks) জাতীয় খাবার আপনার রক্তে সুগার লেভেল স্বাস্থ্যকর পরিসরে রাখতে সাহায্য করে। 

  • ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর, কম চিনিযুক্ত এবং অধিক কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার রাখতে হবে। যেমন - আপেল, স্ট্রবেরি, পালং শাক, ব্রোকলি ইত্যাদি। 

  • কম চর্বিযুক্ত বা চর্বিহীন প্রোটিন যেমন - ডিম, মুরগী, মাছ, টফু ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

  • বিভিন্ন হেলদি প্রোটিন যেমন - জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো, বাদাম ইত্যাদি অবশ্যই খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

  • ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকায় পুষ্টিঘন খাবার রাখা উচিত যা শরীরে ভিটামিন এবং খনিজ সরবারহ করবে এবং সুগার লেভেল ঠিক রাখবে।

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য পরিকল্পনা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাদ্য গ্রহনের পূর্ব পরিকল্পনা করা অপরিহার্য। খাদ্য গ্রহনের পূর্ব পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে যেসকল বিষয়ে 

লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো -


  • কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ( Glaesemic Index) যুক্ত খাবার বাছাই করতে হবে। এই খাবারগুলো হজম হতে বেশি সময় নেয় তাই সেগুলো রক্তের প্রবাহে ধীরে ধীরে শোষিত হয়, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

  • প্রতিটি খাবার এবং স্ন্যাকসের সাথে ফ্যাটহীন প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। হেলদি প্রোটিন যেমন অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডোর পুষ্টিগুন বেশি এবং এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য পরিতৃপ্ত রাখতে সাহায্য করে। 

  • প্রচুর পরিমানে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন - রুটি, পাস্তা, বাদাম, বীজ, লেবু ফল, শাকসবজি ইত্যাদি। এগুলো শরীরে  ফাইবার হজম প্রক্রিয়া ধীর করতে সাহায্য করে। 

  • খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট এর ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। ওটমিল, বাদাম, মাখন এক্ষেত্রে ভালো উদাহরণ হতে পারে। এগুলো শরীরে শক্তি সরবারাহ করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীর যেসব খাদ্য পরিহার করা উচিত

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু খাদ্য পরিহার করা উচিত। ডায়াবেটিস রোগীর যেসকল খাদ্য পরিহার করা উচিত তা হলো -

মিহিদানা

পরিশোধিত শস্য যেমন সাদা রুটি, সাদা ভাত, পাস্তা ইত্যাদিতে পরিশ্রুত কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে এবং এগুলো রক্তে সুগার লেভেল বাড়িয়ে দেয়। এধরনের খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা উচিত। 

প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস 

প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন বেকন, লাল মাংস ইত্যাদি খাদ্যে প্রচুর পরিমানে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা ওজন বৃদ্ধি করে। ওজন বৃদ্ধি একজন ডায়াবেটিস সম্পর্কিত জটিলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই এধরনের মাংস পরিহার করতে হবে। 

মিষ্টি ও চিনিযুক্ত পানীয় 

মিছরি, কুকিজ, কেক এসব খাবারে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে। চিনিযুক্ত পানীয় যেমন সোডা এবং জুসে প্রচুর চিনি থাকে যা সুগার লেভেল বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এসকল খাবার পরিহার করা উচিত। 

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা তৈরি

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা তৈরি করা অপরিহার্য। একজন ডায়াবেটিস রোগীর প্রতিদিন সুষম খাবার গ্রহনের জন্য অবশ্যই একটি খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা তৈরি করার নিয়ম -

স্টার্চ

অনেক কার্বোহাইড্রেটকে স্টার্চ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শস্য, লেবু, আলু,  ভুট্টা ইত্যাদির মধ্যে স্টার্চ রয়েছে। এছাড়াও গমের আটা, বাদামি চাল, রুটি, পাস্তা ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত স্টার্চ যা একজন ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় থাকা প্রয়োজন। 

ফলমূল এবং শাকসবজি 

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি সুষম তালিকার ক্ষেত্রে ফলমূল এবং শাকসবজি অপরিহার্য। এগুলো ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে যা শরীরের জন্য উপকারি। তাই খাদ্য তালিকায় ফলমূল এবং শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। 

প্রোটিন জাতীয় খাবার 

কম ফ্যাটযুক্ত বা ফ্যাটহীন প্রোটিন জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে। চামড়া ছাড়া মূরগী বা টার্কির বুকের মাংস, স্যামন জাতীয় মাছ, মটরশুঁটি, বাদাম, ডিম, দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার দই, পনির ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার অবশ্যই নিয়মিত গ্রহন করতে হবে। এগুলো শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার অপরিহার্য। 

শেষকথা

সুষম খাদ্য খাওয়া ডায়াবেটিস পরিচালনার মূল চাবিকাঠি। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য গ্রহনের মধ্যে জটিল শর্করা, ফাইবার সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি, ফ্যাটহীন প্রোটিন এবং হেলদি ফ্যাট অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য গ্রহনের তালিকা তৈরি করে খাদ্য গ্রহন করা উচিত। সঠিক খাদ্য তালিকা এবং নির্দেশনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরা একটি আনন্দদায়ক এবং পুষ্টিকর জীবনধারা বজায় রাখতে পারে।

ঔষধি গাছের নামের তালিকা ও উপকারিতা

  আপনারা কি ঔষধি গাছ নাম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন? বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক ঔষধি গাছ রয়েছে যাদের ঔষধি গুন ও উপকারিতা অনেক। আজকে আম...